পারিবারিক আদালতের মামলা পরিচালনায় বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমাতে নতুন ই-সেবা চালু করা হয়েছে। নতুন সেবার মাধ্যমে দীর্ঘসূত্রি মামলা, অতিরিক্ত খরচ, দূরত্বজনিত সমস্যা, কাগজের নথি সংরক্ষণ ও সময় ক্ষয়সহ আগের অসুবিধাগুলো কমবে। এছাড়া, অনলাইনে দ্রুত প্রক্রিয়া, কম খরচে ঘরে বসে সেবা গ্রহণ, ডিজিটাল নথি ব্যবস্থাপনা, ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহের সাত দিন রেজিস্ট্রেশন এবং অনলাইন শিডিউলিংয়ের সুবিধা পাওয়া যাবে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের জগন্নাথ-সোহেল স্মৃতি মিলনায়তনে সোমবার (২৪ নভেম্বর) আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আনুষ্ঠানিকভাবে ই-পারিবারিক আদালত উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরে তিনি বলেন, “আইনজীবীরা নিজেদের উদ্যোগ ও অর্থায়নে আদালতের সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভোগান্তি ও দুর্নীতি কমবে এবং সময়ও বাঁচবে। আমাদের ডিজিটাইজেশনের দিকে এগোতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিনা খরচে লিগ্যাল এইডে গিয়ে বিচার পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যেই ২০ জেলায় এটি চালু হয়েছে, ধাপে ধাপে ৬৪ জেলায় প্রসারিত করা হবে। আশা করি, আগামী পাঁচ বছরে মামলার জট ৫০ শতাংশ কমানো সম্ভব হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, “জনগণের সেবার জন্য এই উদ্যোগটি গুরুত্বপূর্ণ। ই-পারিবারিক আদালত নারী ও শিশুদের ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। এটি কাগজবিহীন একটি বিচারব্যবস্থার দিকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীও বক্তব্য রাখেন।
ই-সেবার সুবিধা:
- ঘরে বসে হাজিরা ও অনলাইনে মামলা দায়ের বা ওকালতনামা স্বাক্ষর।
- মামলার তারিখ পরিবর্তন বা নোটিফিকেশন এসএমএসে পাওয়া যাবে।
- অনলাইনে শুনানি এবং কাগজের ভিড় এড়িয়ে সেবা গ্রহণ।
- মা ও শিশুরা বারবার আদালতে আসার ঝামেলা এড়াতে পারবে।
- মামলা সংক্রান্ত সকল নথি সার্ভারে সংরক্ষিত থাকবে।
পারিবারিক আদালতে মামলা পরিচালনা করা আইনজীবী ব্যারিস্টার সজীব মাহমুদ আলম বলেন, “ই-সেবা চালুর মাধ্যমে আদালতের নথি অনলাইনে সংরক্ষিত হবে, নথি হারানো বা ধ্বংসের সমস্যা থাকবে না। এতে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের ভোগান্তি কমবে। আদালতগুলো সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজেশনের পথে এগোচ্ছে, তবে কিছু প্রবীণ আইনজীবী প্রাথমিকভাবে সমস্যা অনুভব করতে পারেন।”
