ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ করতে গিয়ে প্রায় ২০ হাজার ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছে এবং এর মধ্যে ১০ হাজার ৭০০ জন মানসিক সমস্যায় ভুগছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ। তারা বর্তমানে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রিহ্যাব বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রিহ্যাব বিভাগের একটি অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, এই সংখ্যা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নাটকীয়ভাবে বাড়তে পারে। তাদের ধারণা, ২০২৮ সালের মধ্যে মানসিক সমস্যায় ভোগা সেনার সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
গাজায় নিহত ৬৪ হাজারের বেশি, আহত লাখ ছাড়িয়েছে
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৫৯ জন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও হাজারো মানুষ আটকে রয়েছে, ফলে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।
সাবেক সেনাপ্রধানের স্বীকারোক্তি: গাজার ১০ শতাংশ মানুষ হতাহত
সাবেক ইসরায়েলি সেনাপ্রধান হেরজি হালেভি সম্প্রতি দক্ষিণ ইসরায়েলের এক কমিউনিটি বৈঠকে বলেন, গাজার প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ—অর্থাৎ ২ লাখের বেশি নাগরিক—নিহত বা আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, “এই যুদ্ধ গাজার জনসংখ্যার ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে।”
উল্লেখ্য, হালেভি চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে তিনি পদত্যাগ করেন।
ইসরায়েলের দাবি ও আন্তর্জাতিক বাস্তবতা
ইসরায়েল বরাবরই গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ‘হামাস-নিয়ন্ত্রিত’ বলে আখ্যায়িত করে হতাহতের তথ্যকে অস্বীকার করে এসেছে। তবে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বহু সংস্থা বলছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পরিসংখ্যান বিশ্বস্ত ও যাচাইযোগ্য।
যুদ্ধের অভিঘাত: ইসরায়েলি সেনাদের মানসিক স্বাস্থ্যেও ধস
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি এই যুদ্ধ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভেতরেও গভীর মানসিক ক্ষতের জন্ম দিচ্ছে। যুদ্ধ শেষে অনেক সেনা পিটিএসডি, উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও আত্মহত্যাপ্রবণতা নিয়ে ভুগছেন। এসব সমস্যা মোকাবিলায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে বৃহৎ পুনর্বাসন কর্মসূচি হাতে নিতে হচ্ছে।
সূত্র: হারেৎজ, দ্য গার্ডিয়ান


