অ্যাশেজ সিরিজে প্রথমবার দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা দ্বিতীয় দিনেই আলোচনায় উঠে আসেন। পার্থে ইংল্যান্ড–অস্ট্রেলিয়ার টেস্টে জেমি স্মিথের বিরুদ্ধে কট বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়ে তার সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক।
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের ২৮তম ওভারে স্কোর ছিল ১০৪–৬। ডগেটের লেগ সাইডে উঠানো একটি বলে পুল শট খেলেন স্মিথ। শর্ট লেগে থাকা ট্র্যাভিস হেড ব্যাটে আঘাতের শব্দ শোনার দাবি করেন, উইকেটকিপার ক্যারিও আত্মবিশ্বাসীভাবে আপিল করেন। কিন্তু অন-ফিল্ড আম্পায়ার নিতিন মেনন নট আউট দেন। এরপরই অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ রিভিউ নেন।
টিভি আম্পায়ারের দায়িত্বে থাকা শরফুদ্দৌলা প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে নানা কোণ থেকে রিপ্লে পর্যবেক্ষণ করেন। ধারাভাষ্যকার সিমন মান মন্তব্য করেন, এটি তার দেখা সবচেয়ে দীর্ঘ রিভিউগুলোর একটি হতে পারে।
প্রথম রিপ্লেতে ডিআরএসে শব্দ শোনা গেলে স্মিথ মাঠ ছাড়ার প্রস্তুতি নেন। তবে পরের ফুটেজে দেখা যায়, শব্দটি বল ব্যাট অতিক্রম করার পরের। এতে সিদ্ধান্ত আরও জটিল হয়ে পড়ে। শরফুদ্দৌলা বলেন, বল ব্যাটের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কোনো প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।
এরপর তিনি আরও কয়েকবার রিপ্লে দেখেন। এ সময় ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন মন্তব্য করেন—এ ধরনের সিদ্ধান্তে সময়সীমা থাকা উচিত, কারণ পরিস্থিতি বেশ স্পষ্ট মনে হচ্ছে।
অবশেষে শরফুদ্দৌলা জানান, বল ব্যাট অতিক্রম করার ঠিক পরের ফ্রেমে একটি স্পাইক দেখা গেছে, যা ব্যাটের আঘাতের ইঙ্গিত বহন করে। ফলে তিনি মেননকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বলেন। স্মিথকে আউট ঘোষণা করা হলে পার্থ স্টেডিয়াম থেকে অসন্তোষের প্রতিক্রিয়াও শোনা যায়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ তাদের লাইভ প্রতিবেদনে সিদ্ধান্তটিকে প্রশ্নবিদ্ধ বলেছে। তাদের দাবি, স্পষ্ট কোনো প্রমাণ ছাড়া এমন রায় দেওয়া ঠিক হয়নি; প্রযুক্তি অসুস্থির হলে অন-ফিল্ড সিদ্ধান্তেই থাকা উচিত ছিল।
তবে সাবেক বিশ্বসেরা আম্পায়ার সাইমন টফেল মনে করেন, শরফুদ্দৌলা সঠিক সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে দুই ধরনের এজ ডিটেকশন প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে এ ধরনের জটিলতা দেখা দেয়। অস্ট্রেলিয়া যে রিয়েল টাইম–স্নিকো (আরটিএস) ব্যবহার করে, সেখানে বল ব্যাট পার হওয়ার পরের ফ্রেমে স্পাইক দেখা গেলেও সেটি গ্রহণযোগ্য প্রমাণ হিসেবে ধরা হয়। এই ঘটনাতেও সেটিই দেখা গেছে।
টফেলের মতে, সিদ্ধান্তটি সঠিক হলেও আরও দ্রুত নেওয়া যেত। আরটিএস দলও যথাসাধ্য সহায়তা করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
